1295 Times Visited
A_Ahmed
অগাস্ট ২০, ২০২২
মানুষের জীবনে সফলতা বিভিন্ন ভাবে আসতে পারে। কিন্তু কর্ম বিমুখতা বা পরিশ্রম বিমুখতার মাধ্যমে কখনো সফলতা অর্জন সম্ভব নয়। যদি হয় ও সেটা কখনো ধর্তব্য হতে পারেনা। কারন এ ধরনের ঘটনা বিরল ও হঠাত ঘটে থাকে যা উদাহরন হতে পারেনা। আমাদের পরিশ্রম কি নিয়ে হবে সেটা ও একটা প্রশ্ন।
পরিশ্রম করা উচিত যার যার কর্মক্ষেত্র অনুযায়ী। যেমন একজন কৃষকের সর্বদা চেষ্টা থাকা উচিত কিভাবে ভালো ফলন পাওয়া যায়, একজন শিক্ষকের কিভাবে ছাত্রদের পরিপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করা যায় এবং একজন ছাত্রের চেষ্টা থাকা উচিত প্রচুর পরিশ্রমের মাধ্যমে ভালো ফলাফল করার।
রেজাল্ট কোনো ব্যপার না - CPGA doesn’t matter. আমাদের দেশের ছাত্রদের মাঝে খুবই প্রচলিত এবং বিশ্বাসযোগ্য একটি ধারণা। বিভিন্ন আলাপচারিতা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোটিভেশনাল স্পীকাররা ও এই কথাটি বলে থাকেন। উদাহরণ হিসেবে বিল গেটসের কথা বলা হয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুলের কথা বলা হয়। কিন্ত স্কুল পালালেই যে নজরুল অথবা বিল গেটস হওয়া যায়না তার উদাহরণ তো আমাদের আশে আশেই ভুরিভুরি। আপেল বা অন্য ফল বা অন্য অনেক কিছুই তো উপর থেকে নীচে পড়ে বা কারো মাথায় পড়েছে শত সহস্র বছর ধরে অসংখ্যবার। কিন্তু নিউটন ছাড়া কার মাথায় ভাবনা এসেছে চতুর্দিকে খালি জায়গা থাকতে আপেল কেন নীচে পড়ল? সুতরাং ব্যতিক্রম কখনো উদাহরণ বা বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত নয়।
রেজাল্ট কোনো ব্যপার না - CPGA doesn’t matter. এই ধারণাটি শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত ভূল একটি ধারণা। কারন পরিশ্রমের বিকল্প নেই। একজন ছাত্রের কাজ বা কর্মক্ষেত্র হচ্ছে পড়াশুনা করা। সে যদি তার পড়ালেখাকে অবহেলা করে গাল গল্প আর আনন্দ ফূর্তিতে সময় ব্যয় করে তাহলে তার অর্পিত দ্বায়িত্ব সে সঠিকভাবে পালন করলনা এবং পরিশ্রম বিমুখতা তাকে জীবনে পেছনে টেনে নিয়ে যাবে।
উদাহরন স্বরুপ, আমরা দুইজন ছাত্রকে কল্পনা করি যারা সম্প্রতি এইচ এস সি পাশ করেছেন । একজন ছোটবেলা থেকেই খুবই মেধাবী আর অপরজন মোটামুটি মানের মেধাবী। যিনি খুবই মেধাবি তিনি অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সাথে সারা বছর পড়ালেখা না করে পরীক্ষার আগে পরবেন ভেবেছিলেন আর যিনি মোটামুটি মেধাবী তিনি সারা বছর রুটিন মাফিক কঠোর পরিশ্রম করেছেন। ফলাফল স্বরপ অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রটি মোটামুটি মানের একটি রেজাল্ট করেছেন এবং যিনি মোটামুটি মানের ছাত্র ছিলেন তিনি A+ পেয়ে পাশ করেছেন। আমাদের মেধাবী ছাত্রটি এখন বুয়েট সহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষায় অবতীর্ন হতে পারবেন না, ভর্তি হওয়া তো দূরে থাক। আর ভালো ফলাফলের জোরে আমাদের মোটামুটি মেধাবী ছাত্রটি দেশের সকল ভর্তি পরিক্ষায় অবতীর্ণ হতে পারবেন। তাহলে ভালো ফলাফলের গুরুত্ব নিশ্চয় বুঝা গেলো।
ভালো ফলাফল বা CGPA আর ও অনেকগুলো বিষয় প্রকাশ করে । আপনি আপনার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে কতটুকু যত্নশীল তা আপনার CGPA এর মাধ্যমে প্রকাশ পায়। আপনি কি পরিশ্রম বিমূখ নাকি পরিশ্রমী, আপনাকে প্রদত্ত সময়সীমার মধ্যে দায়িত্ব পালনে আপনি কতটুকু সচেষ্ট তাও আপনার CGPA প্রকাশ করে।
একজন শিক্ষার্থীর কাজ হচ্ছে নিয়মিত নিজে পড়াশোনা করা, ক্লাস করা, শিক্ষকের দেওয়া বিভিন্ন এসাইনমেন্ট যত্ন সহকারে স্ঠিকভাবে করা। এগুলো সঠিকভাবে করলে ভালো রেজাল্ট করতে সে বাধ্য। কিন্তু যদি দায়িত্বশীলতার সাথে একজন ছাত্র কঠোর পরিশ্রম ও সাধনার মাধ্যমে তার উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালন না করে তাহলে তার রেজাল্ট ভালো হওয়ার কোন কারন নেই।
সুতরাং, CGPA শুধুমাত্র একটি সংখ্যা নয়, এটি আপনার রেজাল্ট বা অ্যাকাডেমিক জ্ঞানের পাশাপাশি আপনি আপনার লক্ষ্য অর্জনে কত খানি Serious এবং Dedicated, কতখানি Hard Working লক্ষ্যে পৌছাতে এবং সাফল্য পেতে কতখানি Passionate তাই বুঝিয়ে দেয়।
একটি অতি প্রচলিত খনার বচন এক্ষেত্রে আমরা স্মরণ করতে পারি।
'পরিশ্রমে ধন আনে, পুণ্যে আনে সুখ। আলস্যে দারিদ্র আনে, পাপে আনে দুঃখ'।
এখানে ধন শব্দটিকে আমরা সফলতা হিসেবে ধরে নিতে পারি।
সুতরাং পরিশ্রম বিমুখ হয়ে যদি শিক্ষার্থীগণ ভালো ফলাফল না করেন তা কখনো তাদের জ্ন্য কল্যাণ বয়ে আনবেনা।