দ্বিপদ নামকরণ কি (What is Binomial Nomenclature)?

দুটি পদের সমন্বয়ে জীবের নামকরনের পদ্বতিকে দ্বিপদ নামকরন বলা হয়। দ্বিপদী নামকরণের পদ্ধতিটি মূলত কার্ল লিনিয়াস কতৃক প্রবর্তিত হয়েছিল। তার পূর্বে একাধিক স্থানীয় নাম বিশ্বব্যাপী একটি জীবকে সনাক্ত করা এবং প্রজাতির সংখ্যার হিসেব রাখাকে অত্যন্ত কঠিন করে তোলে। এতে নানা রকম  বিভ্রান্তি ও তৈরি হত। এই বিভ্রান্তি থেকে পরিত্রাণ পেতে, Carolus Linnaeus একটি আদর্শ প্রটোকল প্রবর্তন করেছিলেন। এই প্রটোকল অনুযায়ী প্রতিটি জীবের একটি বৈজ্ঞানিক নাম থাকবে যা  সার্বজনীনভাবে সারা বিশ্বে উক্ত জীবকে সনাক্ত করার কাজে ব্যবহার হবে। প্রমিত নামকরণের এই প্রক্রিয়াটিকে দ্বিপদ নামকরণ বলা হয়।

দ্বিপদ নামকরনের এই রীতি অনুযায়ী নামের প্রথম পদটি জীবের গণ (Genus) এর প্রতিনিধিত্ব করবে এবং দ্বিতীয় অংশটি প্রজাতির (Species) প্রতিনিধিত্ব করবে।

যেমন মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হোমো সেপিয়েন্স (Homo sapiens) । 'হোমো' (Homo)গণের প্রতিনিধিত্ব করে এবং 'সেপিয়েন্স' (sapiens) মানুষের প্রজাতির প্রতিনিধিত্ব করে।

দ্বিপদ নামকরণের নিয়ম

সারা বিশ্বের জীববিজ্ঞানীগণ জীবের নামকরণের জন্য একটি অভিন্ন নীতি অনুসরণ করেন। নামকরণের  জন্য দুটি আন্তর্জাতিক কোড রয়েছে যা সমগ্র বিশ্বের জীববিজ্ঞানীদের দ্বারা গৃহিত। সেগুলো হল:

• International Code of Botanical Nomenclature (ICBN) - উদ্ভিদের বৈজ্ঞানিক নামকরণ নিয়ে কাজ করে। ২০১১ সালের আগে পর্যন্ত উদ্ভিদের নামকরণের কোড ছিল এটিই । ২০১১ সালে এটি পরিবর্তন করে করা হয় International Code of Nomenclature for algae, fungi, and plants (ICNafp).

• International Code of Zoological Nomenclature (ICZN)- প্রাণীদের জৈবিক নামকরণ নিয়ে কাজ করে।

এই কোডগুলি অনুসরণের মধ্য দিয়ে  নিশ্চিত করা হয় বিশ্বব্যাপী প্রতিটি জীব একটি নির্দিষ্ট নাম পায় এবং সেই নামটি বিশ্বব্যাপী ব্যবহার করা হয়।

 প্রতিটি বৈজ্ঞানিক নামের দুটি অংশ রয়েছে:

Ø  জেনেরিক নাম/ গণের (Genus) নাম।

Ø  নির্দিষ্ট এপিথেট/ প্রজাতির (Species) নাম।

Ø  জীবের সমস্ত বৈজ্ঞানিক নাম সাধারণত ল্যাটিন হয়। তাই তির্যকভাবে লেখা হয়।

Ø  বৈজ্ঞানিক নাম হাতে লিখলে প্রতিটি অংশের নীচে আন্ডার লাইন দিতে হয়।

Ø  একটি নামের দুটি অংশ আছে। প্রথম শব্দটি গ্ণকে চিহ্নিত করে এবং দ্বিতীয় শব্দটি প্রজাতিকে চিহ্নিত করে।

Ø   গণের নাম একটি বড় অক্ষর দিয়ে শুরু হয় এবং প্রজাতির নাম একটি ছোট অক্ষর দিয়ে শুরু হয়।

 কেন দ্বিপদ নামকরণ গুরুত্বপূর্ণ?

সারা বিশ্বে লক্ষ লক্ষ প্রজাতির জীব ছড়িয়ে আছে। একই জীবগুলি বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন নামে পরিচিত হলে তা সনাক্তকরন ও গবেষনা কাজে নানারকম প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। মুলত এই সমস্যার সমাধানের জন্য  দ্বিপদ নামকরণ আবশ্যক। দ্বিপদ নামকরনের মাধ্যমে সহজেই প্রানীদেরকে সনাক্ত করা এবং প্রজাতি নির্ণয় সম্ভব হয়।

তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া এবং ইন্টারনেট।